তেঁতুলে কী পুষ্টিগুণ রয়েছে।

তেঁতুলে কী কী পুষ্টিগুণ রয়েছে?  


খাওয়া দাওয়ার  সকল সামগ্রীতে কোন না কোন পুষ্টি গুণ এবং উপকারিতা থাকে। হোক সেটা ফল বা সবজিতে বা মসলার, প্রত্যেকেরই নিজস্ব কিছু পুষ্টিগুণ রয়েছে । 
তেঁতুলে কী কী পুষ্টিগুণ রয়েছে?

তেঁতুলে যে পুষ্টিগুণ রয়েছে তা আপনার জানলে অবাক হবেন। 

অধ্যাপক সেলিম বলেছেন। আমি আমার স্বাস্থ্য কর্তব্য পালন করছি, আশা করি আপনিও আপনার কর্তব্য কর্মটি এড়িয়ে যাবেন না। অর্থাৎ তিনি বোঝাতে চেয়েছেন। এই  বার্তাটি আপনি অবশ্যই আপনার শরীরের জন্য গ্রহণ করবেন। এবং শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের মাঝে তা ছড়িয়ে দিবেন ।আপনার ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলি মাঝে শেয়ার করে দিন। যাতে তারাও আপনার ছোট্ট একটি শেয়ার মাধ্যমে অনেক বেশি উপকৃত হতে পারে।

লিভারের দূষিত ময়লা আপনি দূর করতে চান?
হজম শক্তি কমে গেছে?
হজম শক্তি বাড়াতে চান?
ডায়াবেটিসের লেভেলটা কন্ট্রোল করতে চান,
পেপটিক আলসার রোধ করতে চান?
ক্যান্সার থেকে নিজের শরীরকে মুক্ত করতে চান? সর্দি কাশি সারাতে চান? ত্বকের উজ্জলতা ফিরিয়ে আনতে চান?
তেঁতুল খেলে রক্ত পানি হয়ে যায়। কিংবা তেতুল মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর। আধুনিক ডাক্তারদের মতে এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। সবকিছুরই যেমন ভাল ও মন্দ আছে তেমনই তেঁতুলের ভালো ও মন্দ আছে। গরম খুব বেশি বেড়ে গেলে  তেঁতুল পছন্দ করেন না এমন মানুষ পাওয়া খুব কঠিন। বিশেষ করে মেয়েদের খাবারের তালিকায়ও উপরের দিকে পাওয়া যায় এর নাম।
তবে অনেকেরই ধারণা তেঁতুল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এবং তেতুল খেলে রক্ত পানি হয়ে যায়। এই ধারনাটা ভুল। তেতুল এক প্রকার টক জাতীয় বিশেষ ফল ।   


তেঁতুলে কী পুষ্টিগুণ রয়েছে।

তেঁতুলে বোটানিক্যাল নাম তামারিন্ডাস ইন্দিকা দক্ষিণ এশিয়ার সবচাইতে মূল্যবান খাবারের মধ্যে তেতুল অন্যতম। তেঁতুলের সুরেলা নামটি তামরিন ফারসি ভাষা থেকে এসেছে । যার অর্থ ভারতের খেজুর। এটি সারা বিশ্বের কাছে রসাস্বাদনের একটি ফল হিসেবে পরিচিত। আফ্রিকার স্থানীয়রা বলে- এই বহিরাগত ফল অতি লম্বা এক ধরনের গাছে জন্মায়। যা এশিয়া মেক্সিকো ভারত এবং বাংলাদেশের শুষ্ক অঞ্চলে জন্মায়। তেতুল আমাদের দেশের বসন্তকালের টকজাতীয় ফল হলেও সারা বছর পাওয়া যায়, তেঁতুলে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি ও ভেষজগুণ। তেঁতুল দেহে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদ রোগীদের জন্য খুব উপকারী। তেঁতুল দিয়ে কবিরাজি আয়ুর্বেদীয় হোমিও ঔষধ তৈরি করা হয়। পাকা তেঁতুলে মোট খনিজ পদার্থ সব ফলের চেয়ে অনেক বেশি। খাদ্য শক্তির পরিমাণ নারিকেল ও খেজুর ছাড়া সব ফলের চেয়ে অনেক বেশি। ক্যালসিয়াম এর পরিমাণ সব ফলের চেয়ে 5 থেকে 10 গুণ বেশি আছে। অন্যান্য পুষ্টি উপাদান স্বাভাবিক পরিমাণে আছে তেঁতুল। তেঁতুল যেসব রোগের জন্য উপকারী তা হলো- স্কার্ভি রোগ, কোষ্ঠবদ্ধতা, শরীর জ্বালা করা, প্রভৃতি রোগে তেঁতুলের শরবত খুবই উপকারী। তেঁতুল রক্তের কোলেস্টেরল কমায়। মেদ ভুড়ি কমায়, পেটে গ্যাস হলে তেঁতুলের শরবত খেলে ভালো হয়। তেতুল খেলে কোন ক্ষতি হয় না। তবে বেশি খেলে রক্তচাপ কমে যেতে পারে

 আবার অনেকেই মনে করে তেতুল মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর, কিন্তু আসলে এই ধারণাটির সঠিক নয়। তেতুল মস্তিষ্কের জন্য উপকারী। তেঁতুল এসকরবিক এসিড খাবার থেকে আয়রন আহরণ সংরক্ষণ এবং তাবিজ পসে পরিবহন করে। যা মস্তিষ্কের জন্য খুবই প্রয়োজন। মস্তিষ্কের পর্যাপ্ত সরবরাহ চিন্তাভাবনা গতি বৃদ্ধি করে থাকে। তেঁতুল গাছের পাতা, ছাল, ফলেশ্বর পাকা ফলের খোসা, বীজের খোসা সবকিছুই ভীষণ উপকারী। এর কচি পাতা রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে অ্যামিনো এসিড বাতাসের শহর। সর্দি-কাশি ও প্রস্রাবের জ্বালাপোড়ায় বেশ কাজে দেয়। তেতুল চর্বি কমানোয় বেশ বড় ভূমিকা রাখে। তবে তা দেহের কোষে নয় রক্তে কোলেস্টেরল ও ট্রাই গ্লিসারাইড এর মাত্রা এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। দেখা যায় পুরনো তেতুল এর কার্যকারিতা বেশি, যদি পেট ফাঁপা সমস্যা থাকে এবং বদহজম হয়, তাহলে পুরনো তেতুল এক কাপ পানিতে ভিজিয়ে সামান্য লবণ চিনি বা গুড় দিয়ে খেলে সেই অসুবিধা দূর হয়ে যাবে। আবার হাত পা জ্বালা করলেও এই শরবত উপকার পাওয়া যায়। তেতুল হজম ক্ষমতা বাড়ায়, বহুকাল ভারী খাবার খাওয়ার পর টক জাতীয় খাবার খেয়ে আসছে মানুষ। তবে সবচেয়ে কার্যকরী যে  টক সেটা হল তেঁতুল। 



তেঁতুলে কী পুষ্টিগুণ রয়েছে।

তেঁতুল  ফাইবার হজমে সহায়ক এসিড এর ক্ষরণ নিশ্চিত করে, ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও তেঁতুলের সাবস্টেন্স আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং বদহজমের আশঙ্কা করে। ক্রনিকলস কনস্টিপেশনের মতো সমস্যা দূর করতে পারে। তেতুল এককথায় পেটের ভিতরে ঘটে চলা ছোট-বড় প্রতিটি কাজের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। এই ফলটি ফলে যেকোনো ধরনের পেটের রোগ হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। হৃদপিণ্ড চাঙ্গা হয়ে ওঠে। তেতুল খেলে রক্তচাপ বেড়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে তেতুল খাওয়াতে বলেন। বড়রা কিন্তু এতে কোনো উপকার হয় বলে জানা যায় না কিন্তু নিয়মিত খেলে পাওয়া যায় এটা প্রমাণিত। তেঁতুলের বিভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজ ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে রক্তে উপস্থিত বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে হাটে কর্মক্ষমতা কমাতে ব্লাড প্রেসার এবং কোলেস্টরেল নেতিবাচক ভূমিকা রাখতে এই ফলের জুড়ি নেই। আপনি যদি আপনার লিভারের দূষিত ময়লা দূর করতে চান তাহলে আপনি তেঁতুলে শরনাপন্ন হতে পারেন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে তেতুল চটকানো পানি খেলে এক সপ্তাহ তাহলে আপনার লিভার এর সকল দূষিত ময়লা দূর হয়ে যাবে। যেটা কিনা আপনি হাতেনাতে প্রমাণ পেয়ে যাবেন। ডায়াবেটিস কন্ট্রোল করতে তেঁতুলের কোনো জুড়ি নেই, সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে তেঁতুল দারুন ভাবে কাজ করে।

ফলটি কার্বোহাইড্রেট এর শোষণ মাত্রা কমিয়ে দিতে সক্ষম হলে ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রাস পায়।এখন প্রশ্ন করতে পারে কার্বোহাইড্রেট এর সঙ্গে সুগারের কি সম্পর্ক?  শরীরে কার্বোহাইড্রেট এর মাত্রা বাড়তে থাকলে তা ভেঙ্গে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে‌ । সে কারণে অনিয়ন্ত্রিত মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার খেতে মানা করেন চিকিৎসকরা।    তেঁতুলের ভূমিকা শুনে কি আপনি নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছে?


আসুন জেনে নেয়া যাক তেঁতুলের ক্ষতিকারক বিষয় গুলো।

আল্ট্রাভায়োলেট এর হাত থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে যাদের এক নিয়ে আছে তাদের জন্য উপকারী তেঁতুল। তেঁতুল এ উপস্থিত হাইড্রোক্সি এসিড ত্বকের এক্সফলিয়েশন  করতেও সাহায্য করে। যার ফলে মরা কোষ উঠে যায়, এবং ত্বক উজ্জ্বল দেখায়।      

  তেঁতুল খাওয়ার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে- যেগুলো আপনাদের জানা দরকার। যদি রক্তনালীর সংকোচনের ঔষধ গ্রহন করে থাকে তাহলে তেঁতুল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এটি রক্তনালীকে আরো শুরু করে দিবে, ফলে রক্ত প্রবাহ কম হবে। এবং রক্তনালীর পুরোপুরি বন্ধ হতে পারে। নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক এর সাথে প্রতিক্রিয়া দেখায় তেতুল। যেহেতু ল্যাক্সেটিভ হিসেবে কাজ করে, তাই আপনি যদি ইতিমধ্যেই ল্যাক্সেটিভ গ্রহণ করে থাকেন, তাহলে তেঁতুল গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।

Comments